আজ একটা এক্সপিরিয়েন্স শেয়ার করতে চাই। কিছু দিন আগের ঘটনা। আমি আর মা কিছু শপিং করে বাড়ী ফিরছিলাম। রাস্তায় ভ্যানে করে একটা ১৫-১৬ বছরের ছেলে কলা বিক্রি করছিল। পাকা কলা। তো আমার মা দেখে দাঁড়িয়ে গেল। সেই দিনের মা- আর সেই ছেলেটির কথাপোকথন খানিক এমন ছিলো…(আমি পাশে ফোন ঘাঁটছিলাম)
মা – “কিরে কলার কি দাম?”
দোকানি ছেলে – “জোড়া ৭ টাকা…… ডজন ৩৫ টাকা…”
মা – ” কি বলিস রে…… তোর এই সরু সরু কলার এত দাম…!!! ৩০ টাকা ডজন করে
দে, তাহলে ২ ডজন নেব……”
দোকানি ছেলে – ” না মাসীমা, ৭০ টাকা হয়, আপনি ৬৫ দিন “
এই বলে ছেলেটি দুই ডজন গুনে একটি পলিথিনের ক্যারিব্যাগে পুরে দিল। মা কিন্তু কলার সাইজ এবং রঙ নিয়ে নারাজ। মা এক ডজন কলা ক্যারিব্যাগ থেকে বের করে ছেলেটিকে দেখিয়ে বলল…-” এটা কি দিয়েছিস, সরু লিক্লিকে কলা… আর গায়ে কালো কালো দাগ লেগে আছে কেমন……!!! এটা চেঞ্জ করে দে…… ওই …তোর ডান দিকের ছড়াটা ভেঙ্গে দে ……দাম কমিয়েছিস বলে সরু দাগওয়ালা কলা খাওয়াবি !!!!”
দোকানি ছেলে – “মাসীমা দাঁড়ান, আপনাকে মোটা ভালো কলা দিচ্ছি নীচ থেকে……(এই বলে ভ্যানের নীচে রাখা একটি ক্রেট থেকে একটা কলার ফেনা বের করল)…এই সাইজটা পছন্দ তো? “
মা – “হ্যা এটা ঠিক আছে……(মা এবার আমার দিকে তাকিয়ে) দেখছিস দুস্টু, ভালো সাইজের কলা নীচে লুকিয়ে রেখেছে, আর আমাদের সরু কলা বেশী দামে বেচছে……”
ছেলেটি কলার ডজন দুটো প্যাকেটে ভরে মাকে দিল। মাও দাম মিটিয়ে দিল। তারপর ছেলেটি বলল – “মাসীমা , দিদি…… আবার কলা লাগলে আসবেন কিন্ত, ভালো মোটা সাইজের কলা পাবেন আমার কাছে।আর আমার কলার টেস্ট বাজারের অন্য কলার মতন হবে না,… আমার কলা একদম গাছ পাকা!!”
মা – ” খেয়ে দেখি…… তারপর তো বুঝবো তোর কলার স্বাদ কেমন…”
দোকানি ছেলে – ” (মুচকি হেসে ) আমার কলা একবার মুখে নিলে এর স্বাদ সারাদিন মুখে লেগে থাকবে।আবার আসবেন কিন্তু…”
মা আর আমি বাড়ীর জন্যে রিক্সা নিলাম। সারা রাস্তা আমার মাথা ভোঁভোঁ করছিল…… এইটুকু বাচ্চা ছেলে মাকে কিসব কথা বলে দিল, আর মাও না বুঝে (অথবা বুঝেই) দোকানি ছেলেটির সাথে ‘ওর স্পেশাল কলা’ -র গুণগান শুনল হাসি মুখে।